জগৎ বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের তুলার নাম কার্পাস। এক সময় ইতিহাস বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের মূল উপাদান কার্পাস তুলার তীর্থ ভূমি ছিলো ভাওয়াল পরগনা তথা আজকের গাজীপুরের কাপাসিয়া অঞ্চল। নদী বেষ্টিত কাপাসিয়ায় প্রচুর কার্পাস তুলা উৎপাদিত হত। কাপাসিয়ায় ব্যাপক কার্পাস তুলা চাষ হতো বলে এ এলাকার নামকরণ হয়েছে কাপাসিয়া। মূলত কার্পাস থেকেই কাপাসিয়া উপজেলার নামকরণ হয়েছে বলে অনেক ঐতিহাসিক মত প্রকাশ করেছেন।
মসলিন কাপড় উৎপাদন ও বিক্রয়ের অন্যতম বৃহৎ বানিজ্য কেন্দ্র ছিলো কাপাসিয়ার এই জনপদ। কাপাসিয়ায় উৎপাদিত কার্পাস তুলার অতি মিহিম কাপড় আরব ও ইউরোপে রপ্তানী হতো। কালের পরিক্রমায় কাপাসিয়া তার এই ঐতিহ্যটিকে হারিয়ে ফেলেছিলো। দীর্ঘ দিন পরে হলেও কাপাসিয়া উপজেলার হারিয়ে যাওয়া সেই কার্পাসের ঐতিহ্যটিকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারীভাবে মহতি উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কাপাসিয়ার সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি’র ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় কাপাসিয়া উপজেলায় কার্পাস তুলা চাষকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ইত্যেমধ্যে কাপাসিয়াতে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উপজেলা কার্যালয় স্থাপিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১৪ জুন, মঙ্গলবার ৪০জন কৃষককে কার্পাস তুলার চাষাবাদ সম্পর্কে ধারনা প্রদান করার লক্ষ্যে দিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষন কর্মশালার অয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালায় প্রশিক্ষনের পাশাপাশি কৃষকদের মাঝে কার্পাস তুলার চারা বিতরন করা হয়। কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মোর্শেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কার্পাস তুলা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিমিন হোসেন রিমি এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ আখতারুজ্জামান, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, সরকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান অতিথি কৃষকদের মাঝে কার্পাস তুলা গাছের বেশ কিছু চারা বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিছুদিনের মধ্যেই কাপাসিয়া উপজেলায় কার্পাস তুলার চাষকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।